মৌমাছি চাষ
প্রাচীনকাল থেকে মৌমাছি মানুষের নিকট অতি পরিচিত এক প্রকার ক্ষুদ্র, উপকারী ও পরিশ্রমী পতঙ্গ। সাধারণত দলবদ্ধভাবে বাস করে বলে এদের ‘সামাজিক পতঙ্গ’ বলা হয়। মৌমাছিরা ফুলের পরাগায়ন ঘটিয়ে বনজ, ফলদ ও কৃষিজ ফসলের উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। মৌমাছিকে তাদের প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে এনে মৌচাকের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করে আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পালন করাকেই মৌমাছি পালন বলা হয়। মৌমাছি আকারে মাঝারি ও শান্ত, তাই এদের বাক্সে লালন-পালন করা যায়। অন্ধকার স্থান যেমন- গাছের ফোকর, দেয়ালের ফাটল, আলমারি, ইটের স্তূপ ইত্যাদি স্থানে এরা চাক বাঁধে। পবিত্র কুরআনে সুরা আন নাহল ১৬:৬৮-৬৯-এ মৌমাছি সম্পর্কে উল্লেখ আছে: আপনার পালনকর্তা মধু মক্ষিকাকে আদেশ দিলেনঃ পর্বতগাহ্রে, বৃক্ষ এবং উঁচু চালে গৃহ তৈরী কর, এরপর সর্বপ্রকার ফল থেকে ভক্ষণ কর এবং আপন পালনকর্তার উম্মুক্ত পথ সমূহে চলমান হও। তার পেট থেকে বিভিন্ন রঙে পানীয় নির্গত হয়। তাতে মানুষের জন্যে রয়েছে রোগের প্রতিকার। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্যে নিদর্শণ রয়েছে।
মৌমাছি চাষের ইতিহাসঃ
মৌমাছি চাষের ইতিহাস অনেক প্রাচীন হলেও পদ্ধতিগতভাবে সর্বপ্রথম ১৬৩৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মৌমাছি চাষ শুরু হয়। পরবর্তীতে ১৮৪০ সালে মোসেস কুইনবি নামক বৈজ্ঞানিক মৌচাষ শুরু করেন। ১৮৫৩ সালে আধুনিক পদ্ধতিতে মৌচাষ শুরু করেন ল্যাংষ্ট্রোথ নামক বৈজ্ঞানিক যাকে আধুনিক মৌচাষের জনক বলা হয়। ১৮৮৪ সালে সর্বপ্রথম ডকলাস নামক একজন ইংরেজ ভারতীয় উপমহাদেশে মৌচাষের প্রবর্তন করেন। নিউটন নামক একজন ব্রিটিশ নাগরিক ১৯১১ সালে মৌবাক্সকে বর্তমান পর্যায়ে নিয়ে আসেন।
পরবর্তীতে কুমিল্লা পল্লি উন্নয়ন একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা ড. আক্তার হামিদ খান ১৯৫৮ সালে বাংলাদেশে সর্বপ্রথম মৌচাষের সূচনা করেন। পরবর্তীতে ১৯৬৩ সালে বাংলাদশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) বাগেরহাট জেলার যাত্রাপুরে সর্বপ্রথম জনগণকে মৌমাছি পালনের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেন।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস